প্রতিষ্ঠাকাল ও সারসংক্ষেপন
শিল্পকলা একাডেমীর প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৭৪ সাল। গতবছরই পূর্ণ হয়েছে তিনযুগ। অর্থাৎ আজ থেকে ৩৭ বছর আগে গড়ে উঠেছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী নামের একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। স্বদেশ ও সাংস্কৃতিক ভালবেসে বাংলাদেশের মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের সংস্কৃতিক যথার্থ পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যই পাশ করেছিলেন বাংলা একাডেমী এ্যাকট। অতঃপর ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতীয় সংসদে গৃহীত “বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী এ্যাক্ট ১৯৭৪” (এ্যাকট নং ৩১ অফ ১৯৭৪) অনুসারে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ও অবস্থান
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, সেগুনবাগিচা, রমনা, ঢাকা- ১০০০।
শিল্পকলা একাডেমী ঢাকার রমনায় সেগুনবাগিচা এলাকার দুর্নীতি দমণ কমিশনের বিপরীতে অবস্থিত।
যোগাযোগ
ফোন নং- ৯৫৫৪৭৮৫, ৯৫৬২৮৫৩
ওয়েবসাইট- www.shilpakala.gov.bd
খোলা-বন্ধের সময়ষূচী-
শিল্পকলা একাডেমীর অফিসিয়ালি সকাল ৯.৩০ থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত।) কার্যক্রম চলে। এছাড়া যেকোন অনুষ্ঠান চলাকালীন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একাডেমীর কিছু অংশ খোলা থাকে। সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ও শনিবার।
শীতাতপ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী কেন্দ্রীয়ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়। শুধুমাত্র অডিটোরিয়াম ও কনফারেন্সরুম এবং অফিসিয়ালি কিছু কক্ষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং এখানে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা।
একাডেমী সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য ও কার্যাবলী
শিল্পকলা একাডেমী সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- জাতীয় সংস্কৃতির বিকাশ ও উন্নয়ন সাধন। সংস্কৃতি তথা শিল্পকলা ঐতিহ্যগত বিষয়ে গবেষণা, দুস্থ ও গুণী শিল্পীকে সাহায্য প্রদান। বেসরকারী বিভিন্ন সংস্কৃতিক সংস্থাকে অনুমোদন দান অথবা শিল্পকলা একাডেমীর সাথে সমন্বয় সাধন। দেশে এবং দেশের বাইরে জাতীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরা এবং ঐতিহ্যপূর্ণ লোকসংস্কৃতি সংরক্ষন একাডেমীর অন্যতম দায়িত্ব। যেমন-
-চারুকলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
-নাটক।
-সংগীত ও নৃত্যনুষ্ঠান।
-আলোচনা সভা।
-সেমিনার।
-জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রন্থমেলায় অংশগ্রহন এবং প্রকাশনা বিক্রয়ের ব্যবস্থা।
-সিম্পোজিয়াম আয়োজন।
-বিদেশে সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দল প্রেরণ।
-চারুকলা সংগীত, নৃত্য, নাটক ও চলচ্চিত্র বিষয়ক গ্রস্থাদি প্রকাশ।
-প্রশিক্ষণ প্রদান।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী পরিষদ গঠন
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রীকে সভাপতি এবং একই মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সহ-সভাপতি করে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিনিধিদের নিয়ে সাতাশ সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী পরিষদ গঠিত হয়। একাডেমীর মহাপরিচালক পরিষদের সদস্য সচিব। একাডেমীর সার্বিক প্রশাসন সরকার কর্তৃক নিযুক্ত একজন মহাপরিচালকের ওপর ন্যাস্ত। তাকে প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে সাহায্য করেন সরকার কর্তৃক প্রেষণে নিযুক্ত একজন সচিব। বিভাগীয় পরিচালকগন পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত হন। উপ-পরিচালক, উপ-সচিব, পর্যায় থেকে অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ মহাপরিচালক কর্তৃক নিযুক্ত হন।
জেলা শিল্পকলা একাডেমী গঠন
সাংস্কৃতিক কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরী ব্যাতীত দেশের ৬৩ টি জেলায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর তত্ত্বাবধানে জেলা শিল্পকলা একাডেমীগুলো একটি “কার্য নির্বাহী” কমিটি কর্তৃক পরিচালিত হয়। জেলা প্রশাসন পদাধিকার বলে উক্ত কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
একাডেমীর বিভাগসমূহ
-চারুকলা বিভাগ।
-নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিষয়ক বিভাগ।
-সংগীত ও নৃত্যকলা বিভাগ।
-গবেষনা ও প্রকাশনা বিভাগ।
-প্রশিক্ষণ বিভাগ।
-প্রযোজনা বিভাগ।
-প্রশাসন ও অর্থ বিভাগ।
চারুকলা বিভাগ
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর চারুকলা বিভাগ সারা বছর নানা রকম আয়োজন করে থাকে যেমন-
-নবীণ শিল্পীদের চারুকলা প্রদর্শনী।
-সপ্তাহব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
-শিল্পবোধ ও শিল্পকলার ইতিহাস বিষয়ক কোর্স।
-আর্টিষ্ট ক্যাম্পাসের আয়োজন জেলা ভিত্তিক।
-বিভিন্ন শিল্পীর একক প্রদর্শনীর আয়োজন।
-আর্ট ইক্সহেভিটন।
-শিল্পকর্ম প্রদর্শনী।
ইত্যাদি ছাড়াও একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালার মূল থিয়েটার হল, এক্সপেইমেন্টাল থিয়েটার হল, সেমিনার কক্ষ, ষ্টুডিও থিয়েটার ও মহড়া কক্ষ বরাদ্দ বিষয়ক ব্যবস্থাপনাসহ বিভাগীয় যাবতীয় কার্যাদি সম্পাদন করা হয়।
সংগীত ও নৃত্যকলা বিভাগ
শিল্পকলা একাডেমীর সংগীত ও নৃত্যকলা বিভাগেও নানাভাবে সারা বছর শিল্প ও সংস্কৃতির বিকাশে বিভিন্ন আয়োজন করে থাকে। যেমন-
-পহেলা বৈশাখ অর্থাৎ বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে একাডেমীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
-মহান মে দিবস উদযাপন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আয়োজন।
-জাতীয় পর্যায়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্য ও জন্ম বার্ষিকী উদযাপন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন।
-জাতীয় পর্যায়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামে মৃত্যু ও জন্ম বার্ষিকী উদযাপন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন।
-নিয়মিত মাসিক উচ্চাঙ্গ সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন।
-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব পালন।
-সাংস্কৃতিক দলের বিভিন্ন দেশ সফর।
এছাড়াও আরও অন্যান্য Festival ও World-Expo-তে অংশগ্রহন করে থাকে শিল্পকলা একাডেমীর এ বিভাগ।
গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগ
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগ একাডেমীর জন্মলগ্ন থেকে জাতীয় সংস্কৃতি বিকাশের লক্ষ্যে সংগীত, নৃত্য, নাটক, যাত্রা, আবৃত্তি, চলচ্চিত্র, ভাস্কর্য, পুতুলনাচ, চিত্রকলা, হস্তশিল্প ও আলোকচিত্রের বিকাশে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে শিল্পকলার অনাবিষ্কৃত বিষয়গুলোর উপর গবেষণার মাধ্যমে সৃজনশীল সংস্কৃতি সম্পন্ন প্রকাশনা প্রকাশে সদা সচেষ্ট রয়েছে।
প্রশিক্ষণ বিভাগ
সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় শুদ্ধ সংস্কৃতিক চর্চা প্রচার-প্রসার, বিকাশ, উৎকর্ষ সাধন, পরিশীলিত মানুষ ও শিল্পী তৈরীর লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর প্রশিক্ষণ বিভাগ এ পর্যন্ত দেশের ৬৩ টি জেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে চালু করে কন্ঠসঙ্গীত (উচ্চাঙ্গ ও সাধারণ), নৃত্যকলা (উচ্চ ও সাধারন), চারুকলা, আবৃত্তি, নাটক ও তালযন্ত্র (তবলা), বিষয়ে ৪ বছর মেয়াদী সিলেবাস ভিত্তিক পদ্ধতিগত প্রশিক্ষন প্রদান করে যাচ্ছে। এছাড়া দেশের সাংস্কৃতিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষক এবং শিল্পীদের উচ্চতর প্রশিক্ষন প্রদান করে মান উন্নয়নেও এ বিভাগ সচেষ্ট রয়েছে।
প্রশিক্ষণার্থী, প্রশিক্ষক ও শিল্পীবৃন্দ জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা ও অনুষ্ঠানে অংগ্রহনের যোগ্যতা অর্জন করছে। এবং ভালো প্রশিক্ষক তৈরী হচ্ছে। তারা রেডিও, টেলিভিশন ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে শিল্পী হিসাবে অংশগ্রহণ ও প্রশিক্ষক হিসেবে চাকুরী করে অর্থ উপার্জন করছে। ফলে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণে তথা দারিদ্র বিমোচনের কিছুটা হলেও সহায়ক ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর প্রশিক্ষন বিভাগ।
-একাডেমীতে পক্ষকালব্যাপী চারুকলা (পেইন্টিং) বিষয়ক প্রশিক্ষন কর্মশালার আয়োজন।
-মহানগরী ও জেলাভিত্তিক পক্ষকালব্যাপী সঙ্গীত, নৃত্য, নাটক ও তালযন্ত্র বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন।
-শাহ আব্দুল করিম (বাউল সম্রাট) এর গান বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে থাকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী।
-আবৃত্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন।
-অভিনয় বিষয়ক নাট্য প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন।
গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য
জাতীয় সংস্কৃতি তথা চারুকলা সংগীত, নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র, আলোকচিত্র ও হস্তশিল্পের অনাবিষ্কৃত দিকগুলোর গবেষনা, প্রচার-প্রসার ও প্রকাশের অভাবের কথা বিবেচনা করে ১৯৭৫ সনের জুলাই মাসে একাডেমীর গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগটি খোলা হয়। এ বিভাগ হতে ইতোমধ্যে প্রায় দুই শতাধিক প্রকাশনাসহ এগারজন প্রখ্যাত শিল্পীর চিত্র প্রতিলিপি এবং বিশজন শিল্পীর চিত্রকর্মের ভিউকার্ড প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া শিল্পকলা একাডেমীর কার্যক্রম শুধু দেশের সীমাবদ্ধতা না রেখে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বিস্তৃত করার জন্য একাডেমীর গবেষনা ও প্রকাশনা বিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
প্রকাশনা কার্যক্রম
“শিল্পকলা” বুলেটিন প্রকাশ
বুলেটিন জাতীয় সংস্কৃতির বিকাশ প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর নিয়মিত প্রকাশনা ও সমূহের মধ্যে অন্যতম। পত্রিকাটি প্রতিটি জেলা শিল্পকলা একাডেমী কর্তৃক বাস্তবায়িত কর্মকান্ডের সংক্ষিপ্ত বিবরণসহ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর বিভিন্ন বিভাগের সম্পাদিত কার্যক্রমের বিবরণাদি নিয়ে প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটিতে দেশের নবীণ ও প্রবীণ প্রতিভাবান শিল্পীদের পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এছাড়া সম্প্রতি পরলোকগত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনসহ তাদের জীবনী কর্মকান্ডমূলক পরিচিতি পত্রিকাটিতে স্থান পেয়ে থাকে। একাডেমীর নিয়মিত প্রকাশনার অংশ হিসেবে “শিল্পকলা” বুলেটিন সর্বেশেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়।
শিল্পকলা ষাম্মাসিক বাংলা পত্রিকা প্রকাশ
গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগ প্রতিবছর “শিল্পকলা” ষাম্মাসিক বাংলা পত্রিকার দু’টি সংখ্যা প্রকাশ করে। দেশের প্রোথিতযশা লেখক সাহিত্য সাংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয়ের উপর গবেষনাধর্মী প্রবন্ধ লিখে থাকেন এ পত্রিকাটিতে।
“শিল্পকলা” বার্ষিক ইংরেজী জার্নাল প্রকাশ
জাতীয় সংস্কৃতির প্রচার, প্রসার ও বিদেশীদের কাছে নিজস্ব সংস্কৃতি তুলে ধরার লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর গবেষনা ও প্রকাশনা বিভাগ অন্যান্য প্রকাশনার পাশাপাশি “শিল্পকলা” বার্ষিক ইংরেজি জার্নাল প্রকাশ করে আসছে। দেশের বরেণ্য লেখক, কবি, সাহিত্যিক, শিল্পীও গবেষকদের ইংরেজী ভাষায় রচিত প্রবন্ধ জার্নালটিতে সন্নিবেশিত হয়ে থাকে।
গ্রন্থাগার পরিচালনা
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগ প্রকাশনা কার্যক্রম এর পাশাপাশি একটি গ্রন্থাগারও পরিচালনা করে আসছে। গ্রন্থাগারটি একাডেমীর জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্রের তৃতীয় তলায় অবস্থিত। গ্রন্থাগারটিতে শিল্প সাংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয়ের উপর দেশী-বিদেশী প্রায় সাত সহস্রাধিক গ্রস্থ রয়েছে। বিশেষ করে চারুকলা, আলোকচিত্র ভাস্কর্য, নাটক, সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়ের উপর বেশকিছু মূল্যবান দূর্বল গ্রন্থ গ্রন্থাগারটিকে সমৃদ্ধ করেছে। এছাড়া সংগীত, নৃত্য, নাটক, আবৃত্তি, চলচ্চিত্র, যাত্রা, হস্তশিল্পসহ লোক-সাংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয়ের উপর অনেক মূল্যবান গ্রন্থে গ্রন্থাগারের কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রন্থাগারটি সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়।
বিক্রয় কেন্দ্র
শিল্পকলা একাডেমীতে ২ টি নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্র চালু রয়েছে। দেশী-বিদেশী আগ্রহী ক্রেতা সাধারণ সরাসরি এ বিক্রয়কেন্দ্র থেকে বইপত্র ক্রয় করতে পারেন। সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ক্রেতা সাধারণের জন্য এই বিক্রয় কেন্দ্র খোলা রাখা হয়। বিক্রয় কেন্দ্রটি একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালার নিচতলায় অবস্থিত। এছাড়া একাডেমীর কফি হাউজ সংলগ্ন অপর বিক্রয় কেন্দ্রটি ছুটির দিনসহ প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়।
বিক্রয় কমিশন
শিল্পকলা একাডেমীর গবেষনা ও প্রকাশনা বিভাগ জন্মলগ্ন থেকে নিয়মিতভাবে শিল্প সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয়ের উপর গবেষণামূলক গ্রন্থ ও পত্র-পত্রিকা প্রকাশ ও বিক্রি করে আসছে। গ্রন্থমেলা বিক্রয়ের লক্ষ্যে বিভাগের নিয়ন্ত্রনে ২টি নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে।
উক্ত কেন্দ্র ২টি থেকে নিম্নোত্ত নিয়মাবলী অনুযায়ী ক্রেতাসাধারণ বইপত্র ক্রয় করতে পারেন। (বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)
ক) একত্রে যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ন্যূনতম ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) টাকা বই/পত্রিকা ক্রয় করলে তাকে ৩০% হারে বিক্রয় কমিশন দেয়া হয়।
খ) উপরোক্ত নিয়মে একবার বই/ পত্রিকা ক্রয় করলে পরবর্তীতে যে কোন সময় সংশ্লিষ্ট ব্যাত্তি বা প্রতিষ্ঠান ন্যূনতম ১০ কপি একই বই ক্রয়কালে কিংবা ন্যূনতম ৫০০ টাকার (পাঁচশত) বই/ পত্রিকা ক্রয় করলে ৩০% হারে কমিশন পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়।
গ) ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) টাকার কম অথবা ২,০০০ (দুই হাজার) টাকার উধ্বে যে ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান বই/ পত্রিকা ক্রয় করবেন তাকে ২৫% হারে বিক্রয় কমিশন দেয়া হয়।
ঘ) ২,০০০ (দুই হাজার) টাকার কম অথবা ৫০০ (পাঁচশত) টাকার ঊধ্বে ক্রয়কারীকে ২০% হারে কমিশন দেয়া হয়।
ঘ) ৫০০ (পাঁচশত) টাকার কম অথবা ১০০ (একশত) টাকার উধ্বে ক্রয়কারী পাবেন ১৫% কমিশন।
ঙ) এছাড়া জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মাধ্যমেও একাডেমীর সকল প্রকাশনা নিয়ম অনুযায়ী বিক্রয় হয়ে থাকে।
প্রকাশনা তালিকা
-নাটক ও নাট্যকলা বিষয়ক বই।
-ইতিহাস, স্থাপত্য, জীবনী ও ক্যালিগ্রাফী বিষয়ক বই।
-চলচ্চিত্র বিষয়ক বই।
-হস্তশিল্প বিষয়ক বই।
-নৃত্য বিষয়ক বই।
-সংগীত বিষয়ক বই।
-আলোকচিত্র বিষয়ক বই।
-চারুকলা বিষয়ক বই।
-আর্ট অব বাংলাদেশ সিরিজ।
-পোলিও।
-কনটেম্পরারী আর্ট সিরিজ।
-চিত্র প্রতিলিপি (রিপ্রোডাকশন)।
-শিল্পকলা ষাম্মাসিক মুখপত্র (বাংলা পত্রিকা)।
-শিল্পকলা বার্ষিক ইংরেজী জার্নাল।
-শিল্পকলা বুলেটিন।
মিলনায়তন, সভা, সেমিনার, নাট্যশালা অন্যান্য
শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালা মূল থিয়েটার হল, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল বা পরীক্ষণ থিয়েটার হল ও ষ্টুডিও থিয়েটার হল আছে। এছাড়া জাতীয় নাট্যকলা সেমিনার কক্ষ, সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তন, শিল্পকলা জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তন আছে এবং নাট্যশালা ও চলচ্চিত্র বিষয়ক বিভাগে আবৃত্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা একাডেমীর প্রশিক্ষণ ভবনের নিচতলায় মহড়া কক্ষ আছে। এবং এখানে চিত্রশালা প্লাজাও আছে।
ভাড়া পদ্ধতি ও যোগাযোগ
যে কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক, আবৃত্তি, উৎসব, ফেষ্টিভাল বা সভা সেমিনারের জন্য একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালার মূল থিয়েটার হল, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল, সেমিনার কক্ষ, ষ্টুডিও থিয়েটার ও মহড়া কক্ষ বরাদ্ধ বিষয়ক ব্যবস্থাপনাসহ বিভাগীয় যাবতীয় কার্যাদি সম্পাদনের জন্য শিল্পকলা একাডেমীর নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিষয়ক বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে এবং ভাড়া সংক্রান্ত বিষয়াবলী মূল ভবনের ৫ম তলায় যোগাযোগ করতে হবে।
কতদিন পূর্বে বুকিং
এক মাস পূর্বে বুকিং দিতে হয়।
আসন সংখ্যা
সর্বনিম্ন ১৫০, সর্বোচ্চ ৬০০ জন বসার আসন আছে মিলনায়তনগুলোতে।
এছাড়া মহড়া কক্ষ ও সেমিনার কক্ষগুলোতে ৫০ থেকে ১০০ জন।
আসনের ক্যাটাগরি
মিলানায়তন গুলোতে স্পেশাল চেয়ার, গদি, অটো সোফা ও চেয়ার আছে। এছাড়া অন্যান্য কক্ষগুলোতে স্থানভেদে বসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে।
গ্রীণরুম
স্টুডিও থিয়েটার হল ও পরীক্ষণ হল ও নাট্যশালার পৃথক পৃথক গ্রীণরুম আছে।
সাউন্ড প্রুফ রুমও লাইটিং
থিয়েটার হল ও সভাকক্ষগুলো সম্পূর্ণ সাউন্ড প্রুফ ও লাইটিং ব্যবস্থাও আছে। এছাড়া অনুষ্ঠানভেদে আরও লাইটিং ব্যবস্থা করার সুযোগ আছে।
প্রোটুলস্ সফটওয়্যার অডিও ভিজ্যুয়াল ও অন্যান্য
পরিক্ষণ থিয়েটার হল ও জাতীয় নাট্যশালায় প্রোটুলস সফটওয়্যার ও অডিও ভিজ্যুয়াল এবং ডায়াস সজ্জার ব্যবস্থা আছে।
সাউন্ড, মাইক্রোফোন, ষ্ট্যান্ডিং ও অন্যান্য
সাউন্ড সিষ্টেম, মাইক্রোফোন, ষ্ট্যান্ডিং, মাল্টিমিডিয়া ও অন্যান্য লজিষ্টিক সাপোর্ট পাওয়া যাবে এখান থেকেই এছাড়া প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপকরণ ও যন্ত্রপাতি বাইরে থকে সংগ্রহ করা যাবে।
কি কি উপরকরণ বাইরে থেকে ভাড়া নিতে হয়?
অনুষ্ঠানের ও স্থানভেদে কিছু উপকরণ বাইরে থেকে ভাড়া নিতে ও ব্যবস্থা করতে হয়। যেমন- ফুল, গালিচা, মাল্টিমিডিয়া, ডেকোরেশন ব্যবস্থা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বাইরে থেকে ভাড়া করার ব্যবস্থা করতে হয়।
টয়লেট ব্যবস্থা
প্রতিটি ফ্লোরে অডিটোরিয়াম ও গ্রীণরুমসহ অন্যান্য কক্ষগুলোতে মহিলা এবং পুরুষদের জন্য আলাদা আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা আছে।
অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা
শিল্পকলা একাডেমীর প্রতিটি বিভাগীয় ভবনগুলোতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা আছে।
প্রতিটি ফ্লোরে ফায়ার এক্সটিংগুইসার ও ফায়ার এক্সিট আছে।
লিফট ও কার পার্কিং
শিল্পকলা একাডেমীর মূল ভবনগুলোতে কার্গো লিফট ব্যবস্থা আছে। এবং ভেতরে যথেষ্ট পরিমান গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা আছে।
সনদপত্র
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে পক্ষকালব্যাপী মাসিক ত্রৌমাসিক ও বাৎসরিক প্রশিক্ষনের প্রশিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।
কোন কর্তৃপক্ষের তত্বাবধায়নে আছে
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে আছে।
ক্যান্টিন ও ফাষ্টফুড
শিল্পকলা একাডেমীর প্রবেশ পথেই মূল ভবনের নিচতলায় ক্যান্টিন ফাষ্টফুড ও কফি শপের ব্যবস্থা আছে।
বাইরের বিবরণ
শিল্পকলা একাডেমীর মূল প্রবেশপথ ৩ টি। এছাড়া প্রতিটি প্রবেশদ্বারের সামনে চা-নাস্তার জন্য ভ্রাম্যমান দোকান আছে। বিকালে চটপটি ও ফুচকাসহ মুখরোচক খাবারও পাওয়া যায়।
টিকেট প্রাপ্তি
যে কোন অনুষ্ঠান, উৎসব নাটক ও যেকোন কালচারাল অনুষ্ঠানগুলোতে প্রবেশপথের সামনেই টিকেট কাউন্টারের ব্যবস্থা থাকে এবং অনুষ্ঠান ও আয়োজনের দিন টিকেট সংগ্রহ করা যায়।