প্রচ্ছদের শুরুটা খুব বেশি দিনের না হলেও গল্পটা কিন্তু অনেক অনেক দিনের। সেই যে সুদীর্ঘ ৫ বছরের স্থাপত্য বিভাগের গল্পটাই ঘুরে ফিরে কথায়,কাজে আর কল্পনায় চলে আসে। স্থাপত্য মানেই হল রাতের পর রাত বিসর্জন দেয়া আর সকাল বেলায় আয়নায় নিজেকে একবার দেখার সৌভাগ্য না হওয়া। আড়ি পাতলেই শোনা যেত কেন এত অগোছালো হয়েই রোজ রোজ বেরিয়ে পড়া! পাশের বাড়ির মেয়েটার মত সম্পূর্ণতা কেন আমার সাজে দেখা যায় না। কেউ তো জানেনা সেই মেয়েটার মত কেবল একটা হাল ফ্যাশনের ব্যাগ কাঁধেই আমার যাত্রা না। আমার সফরসঙ্গী হল অগণন খুঁটিনাটি জিনিস, আগের রাতে করা প্রিলিমিনারি মডেল আর কুঁচকানো ট্রেসিং পেপারে আঁকা আমার সারা রাতের কাব্য।
এ তো গেল স্থাপত্যের কথা। কিন্তু এটা আমাদের মত হাজার হাজার শহুরে মেয়ের গল্প নয় কি? ভাবুন তো একবার সেই মেয়েটার কথা যার গাড়ির সুব্যবস্থা নেই। যে মেয়েগুলোর সকালটাই হয়তো শুরু হয় রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কিংবা ঠিক সময়ে ঠিক বাহনটা না পেয়ে। কিন্তু শহুরে ললনা বলে কথা। তাকে তো আশেপাশের কেতাদুরস্ত মেয়েগুলোর সাথেই তাল মিলিয়ে চলতে হয়। একটু পা পিছিয়ে পড়লেই যেন হাজারো কটুকথার বাণ।
প্রচ্ছদের গল্পটা যেন ঠিক এখান থেকেই। প্রিয় একজন স্থপতির মূল্যবান একটি উক্তি দিয়েই আমাদের প্রচ্ছদের গল্পটা শুরু করা যাক। মিস ভ্যান ডার রোহে (Mies Van Der Rohe) একটি দারুণ কথা বলে গিয়েছেন। তা হল, "LESS IS MORE" অর্থাৎ, জটিলতার চাইতে সরলতাই বাঞ্ছনীয়।
আর তাই আমরা একটা শহুরে মেয়ের দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততাকে মাথায় রেখেই সাজিয়েছি প্রচ্ছদের বসন। কিভাবে একটি সাধারণ মেয়ে শত বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়েও কেবলমাত্র একটি সাধারণ পোশাকেই হয়ে ওঠে অনন্যা। সঙ্গী হয় স্বস্তি আর প্রাণবন্ত সতেজতা। প্রচ্ছদের প্রতিটি নকশার বুননে আপনি খুঁজে পাবেন আপনার একান্ত স্বত্বাকে। আমাদের লক্ষ্য আপনাকে ফ্যাশন ডিভা হিসেবে অনুপ্রাণিত করা না। বরং প্রচ্ছদ চায়, প্রতিটা শহুরে পরিস্থিতিতে আপনি নিজেকে কি করে সাবলীলভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন। তো প্রচ্ছদের হাত ধরে ফ্যাশনটাকে একটু অন্য চোখেই দেখুন না, হয়তো নিজের 'আমি' টাকে খুঁজে পাবেন!
প্রচ্ছদের উপাখ্যানটা শুধু পোশাকেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। প্রচ্ছদকে বিভিন্ন প্রচ্ছদের আঙ্গিকে দেখতে চাই। প্রচ্ছদ মানে প্রতিফলন। আপনি ভেতরে যা, তারই একটা বাহ্যিক খণ্ডচিত্র। দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন দৃশ্যরূপে "প্রচ্ছদ" কে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।