উদ্দেশ্যঃ আমরা চাই পিতাম্বরপুর গ্রাম এবং তৎ-সংলগ্ন প্রতিবেশী গ্রাম সমূহের মধ্যে বিজয়ের বার্তা পৌঁছিয়ে দেওয়া। আপনাদের সুখ-দুঃখে, হাসি-কান্নায়, বিপদে-আপদে “বিজয়ের আলো” সংগঠন সর্বদা আপনাদের পাশে থাকতে চায়। আমাদের সংগঠনের উদ্দেশ্যে হচ্ছে সকল মানুষের মধ্যে সু-সম্পর্ক, সোহার্দ্যবোধ ও শ্রদ্ধাবোধ তৈরি করা। সমাজের প্রতিটি মানুষের সু-শিক্ষা নিশ্চিত করা। সকল বেকার মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। সমাজ থেকে যতপ্রকার অবৈধ, অকল্যাণকর কাজ আছে সেগুলো নির্মূল করা। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে বিশেষ কিছু না কিছু গুনাবলি লুকায়িত থাকে সেগুলোকে সামনে তুলে ধরে সমাজকে এগিয়ে নেওয়া। সমাজের মধ্যে ধনী-গরীবের যে বৈষম্য বিরাজমান তা দূর করা। সমাজের প্রতিটি মানুষ যেন তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। বর্তমান সমাজে বৃদ্ধাশ্রম বলে যে অপসংস্কৃতি চালু হচ্ছে সে গুলো রোধ করার জন্য সকল মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করা। দশের লাঠি একের বোঝা এ প্রবাদটির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা। প্রত্যেক মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
অতীতের পথচলাঃ আমাদের সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করে রক্তদানের মাধ্যমে। ২০১২ সালে থেকে ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাস পর্যন্ত, আমরা প্রায় ৯০০ মানুষের রক্তের গ্রুপ বিনামূল্যে পরীক্ষা করি এবং বিনামূল্যে প্রায় ৪০৮ ব্যাগ রক্ত মানুষের মাঝে দান করে আসছি। প্রতি বছর পিতাম্বরপুর ও পাশ্ববর্তী বিদ্যালয় সমূহের মধ্যে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও কিছু সংখ্যক অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের বার্ষিক সকল খরচ আমাদের সংগঠন বহন করে আসছে। ২০১২ সাল থেকে প্রতিটি রমজানের ঈদে দরিদ্র মানুষের মাঝে ইফতারি, সেমাই-চিনি (প্রত্যেক বার ১৮০টি পরিবারের মাঝে) বিতরণ করে আসছি। প্রতিটি ঈদে আমাদের অজোপাড়া গ্রামের মধ্যে আলোকসাঁজ করে আসছি, (প্রায় ৬০০ মিটার করে)। বিনামূল্যে ডাক্তারি ক্যাম্প করার মাধ্যমে অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা দিয়ে আসছি, (একজন স্থায়ী ডাক্তার বিনামূল্যে দরিদ্র ও অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা দিবে সে রকম ব্যবস্থা করার কার্যক্রম চলছে)। সকল মানুষের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমাদের বিদ্যালয়ের পাশে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করি। রাত্রি বেলা পথচারীদের নির্বিগ্নে চলাফেরার জন্য পৌরসভার ন্যায় আমাদের গ্রাম ও পাশ্ববর্তী গ্রামের মধ্যে ল্যাম্প পোষ্ট স্থাপন করছি, (যার কার্যক্রম এখনও চলমান)। “শিক্ষার কোন বয়স নাই” সেই কথা চিন্তা করে আমাদের সংগঠনের অফিসের সাথে একটি লাইব্রেরী আমরা দিয়েছি। তাছাড়া দরিদ্র মানুষের গৃহ পুন-নির্মানের জন্য নগদ টাকা ও টিন ক্রয় করে দিয়ে তাদের পাশে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি। বিভিন্ন প্রকার সামাজিক অনুষ্ঠান, বিয়ে কিংবা কেউ মারা গেলে তার জানাযায়“বিজয়ের আলো” সংগঠনের সদস্যদের উপস্থিতি থাকে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ ““বিজয়ের আলো”” সংগঠনের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম হচ্ছে, আমাদের পিতাম্বরপুর গ্রাম এবং পাশ্ববর্তী প্রতিটি গ্রামের মধ্যে সকল শিক্ষা বঞ্চিত ছেলে মেয়েদের কে শিক্ষার সুযোগ করে দিয়ে সমাজ তথা দেশটাকে শিক্ষিত করার জন্য সহযোগিতা করা। গাছের চারা রোপনের মাধ্যেমে সামাজিক বনায়ন সৃষ্টি করে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি লাঘব করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা। অস্বচ্ছল উপযুক্ত মেয়েদের বিবাহ সমস্যা থাকলে তার দূরা করার জন্য চেষ্টা করা এবং পাশাপাশি বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করা। সমাজ থেকে হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি, মারামারি ও সকল প্রকার কু-সংস্কার দূর করা। আমাদের পিতাম্বরপুর গ্রাম এবং পাশ্ববর্তী গ্রামের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সকল মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা। অর্থ এবং রক্তের অভাবে যেন কোন মানুষ মারা না যায় সেই জন্য আমাদের সংগঠনের কার্যক্রম আমাদের উপজেলা এবং পাশ্ববর্তী উপজেলার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া। যুবকরাই পারে একটি সমাজকে পরিবর্তন করতে, সেই জন্য সকল যুব সমাজের মধ্যে সচেতনতা এবং কর্মসংস্থান এর কাজ আরো তৈরি করা। প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থায়ীভাবে একজন ডাক্তার নিয়োগ করা। আমাদের এবং পাশ্ববর্তী গ্রাম সমূহের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ল্যাম্প পোষ্ট এর কাজ আরো বিস্তৃত করা। ইসলাম ধর্মের শান্তির বাণী সমূহ মানুষের মাঝে পৌঁছে দেওয়া তার পাশপাশি সকল ধর্মের মানুষদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমাজের উন্নয়নের জন্য কাজ করা।
“আপনাদের সবার সাহায্য-সহযোগিতা ও আন্তরিকাতার কারণেই আমরা এতটুকু কাজ করতে পেরেছি সেই জন্য আমরা আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। পূর্বের ন্যায় আপনারা সবাই আমাদের পাশে থাকবেন এবং একটি আদর্শ সমাজ গঠনে আমাদেরকে সার্বিক ভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে যাবেন।পরিশেষে আপনাদের সবার দোয়া কামনা করছি।”