১৯১২ সালের ১ জানুয়ারি এ প্রতিষ্ঠানটি আত্ন প্রকাশ করে ‘এম-ই’ স্কুল হিসেবে। প্রতিষ্ঠা স্থান ছিল ‘রথ বাজারের মাঠ’ যেখানে তৎকালীন সময়ে সান্দিকোনা গ্রামেরস্বর্গীয় শ্রীশ চন্দ্র উকিলি (তদানিন্তন তালুকদার) মহাশয়ের ‘রথ টেনে নেয়া হত। এম-ই স্কুল হিসেবে বিদ্যালয়টিতে পড়ানো হত ৪র্থ শ্রেণী থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত তিনটি শ্রেণীতে। শিক্ষক সংখ্যা ছিল ৪ জন। প্রথম প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন হর মোহন বিহারী বিশ্বাস। তখনকার সময়ে শতকরা ৯০ ভাগ ছাত্র ছিল হিন্দু সম্প্রদায় ভূক্ত।এভাবেই বিদ্যালয়ে চলছিল প্রাথমিক শিক্ষা পরবর্তী এ অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থায় কেন্দুয়া জয় হরি স্প্রাই ইনস্টিটিউট কেন্দুয়া থানার প্রাচীনতম বিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও থানা ভিত্তিক মাধ্যমিক শিক্ষার চাহিদা মেটাতে পারছিল না। প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল ইউনিয়ন ভিত্তিক মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি তখনকার সময়ের সুশীল সমাজ বিশেষভাবে উপলব্ধি করার প্রেক্ষিতে সান্দিকোনা এম-ই স্কুলটিকে এলাকার অধিকংশ শিক্ষার্থীর চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে বর্তমান স্থান “সান্দিকোনা চৌরাস্থার মোড়” এ স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সার্বজনীনতার দিকে লক্ষ্য রেখে স্কুলটির নামকরণ করা হয় “সান্দিকোনা নিম্ন মাধ্যমিক ইংরেজী বিদ্যালয়”। ফলে আশে পাশের ইউনিয়ন সহ অত্র এলাকার শিক্ষা বিস্তারের পথ অনেকটা সুগম হয়। সময়কালটা ছিল ‘ব্রিটিশ’ আমল। ইংরেজী শিক্ষার গুরুত্ব ক্রমেই বেড়ে চলছিল। এলাকার গুনীজন উপলব্ধি করলেন বিদ্যালয়টিকে উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় হিসেবে উন্নিত করার। এ চিন্তারই ধারাবাহিকতায় বিদ্যালয়টিকে “সান্দিকোনা মাধ্যমিক ইংরেজী বিদ্যালয়” হিসেবে উন্নিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়। শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিগণের প্রচেষ্টার ফলে ১৯১৮ সালে বিদ্যালয়টিতে নবম শ্রেণী খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। নিয়োগপ্রাপ্ত হন সুযোগ্য শিক্ষক মন্ডলী। মাধ্যমিক ইংরেজী বিদ্যালয়ে প্রথম প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান বাবু এন কে রায়। সুযোগ্য প্রধান শিক্ষক মহোদয়ের পরিচালনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ঈর্ষণীয় পর্যায়ে পৌছে যায়। উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় হিসেবে প্রথম সরকারী সকৃতি প্রাপ্ত হয় ০১-০১-১৯২০ সনে। সে বছর প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন বাবু অশ্বিনী কুমার লাহিরী। পরবর্তী সময়ে যিনি ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজ থেকে অধ্যক্ষ হিসাবে অবসরে যান। (সূত্র- অত্র বিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষক মথুর চন্দ্র রাহা, শিক্ষকতা কাল (১৯৪৩-১৯৭০সন) ১৯২০ সালে প্রথন যে সকল ছাত্র এ প্রতিষ্ঠান থেকে কোলকাতা বোর্ডের অধীনে এন্ট্রেন্স পরীক্ষা দেন সংখ্যার দিক থেকে তাঁরা ছিলেন ২০ জন। পরীক্ষার ফলাফল প্রকশ হওয়ার পর দেখা যায় ২০ জন ছাত্রের মধ্যে ১৯ জন পরীক্ষার্থী ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং ১ জন ছাত্র মাত্র ২য় বিভাগ প্রাপ্ত হন। বিদ্যালয়ের এ ঈর্ষানীয় ফলাফলে আশেপাশের ইউনিয়ন সহ অত্র এলাকার শিক্ষানুরাগীদের দৃষ্টি আকর্ষন করে এ প্রতিষ্ঠানটি। খুলে যায় ইংরেজী শিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের দ্বার। এসব কৃতি ছাত্রদের অনেকেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে তখনকার সময়ে সম্মানিত পদে নিয়োগ লাভ করেন। নানা রকম চড়াই উৎরাইয়ের ভেতর দিয়ে চলতে থাকে বিদ্যালয়ের অগ্রগতি। স্বগৌরবে এগিয়ে যায় ৫০ এর দশক পর্যন্ত। আর এরি ধারাবাহিকতায় এ প্রতিষ্ঠান থেকে বেরিয়ে আসেন অনেক কৃতি ছাত্র যারা বিদেশে নিজ কর্মের স্বাক্ষাররেখেছেন।