আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ

28/1 nayapolton, Dhaka, 1000 ,Bangladesh
আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ is one of the popular Organization located in 28/1 nayapolton ,Dhaka listed under Organization in Dhaka ,

Contact Details & Working Hours

More about আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ

কাল আসবে কোকোর লাশ ॥ দাফন হতে পারে বনানী কবরস্থানে
শোকে এখনো নির্বাক খালেদা জিয়া কার্যালয়ে কূটনীতিকসহ বিশিষ্টজনরা

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ইন্তিকালে শোক প্রকাশ করেন (১) চীনা দূতাবাস (২) ব্রিটিশ হাইকমিশন ও (৩) সৌদী দূতাবাস -
স্টাফ রিপোর্টার : আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে দেশে আনা হবে মহান স্বাধীনতার ঘোষক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর লাশ। তার লাশ নিয়ে আসতে এরই মধ্যে মালয়েশিয়া পৌঁছেছেন মামা শামীম ইস্কান্দার। জানা গেছে, কোকোকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হতে পারে। মঙ্গলবার ঢাকায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাদ আসর মরহুম কোকোর নামাযে জানাযা এবং আগামী বুধবার সারা দেশে গায়েবানা নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। কোকোর মৃত্যুতে সোম, মঙ্গল ও বুধবার বিএনপি দেশব্যাপী শোক দিবস পালন করবে। শোক দিবস উপলক্ষে দেশের সকল দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করবে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে শোক কর্মসূচি পালনের জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর খবর পাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া শোকে এখনো নির্বাক। তিনি বাকরুদ্ধ। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, দল, জোট, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং পরিবারের লোকজন সমবেদনা জানাতে গুলশানে তার অফিসে আসছেন। কিন্তু বেগম জিয়ার সাথে কারোই সাক্ষাৎ হচ্ছে না। তিনি এখনো কথা বলতে পারছেন না বলে জানান তার ব্যক্তিগত সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। ঘনিষ্ঠ পারিবারিক সদস্যরা ছাড়া কেউই তার দেখা পাচ্ছেন না। শিমুল বিশ্বাস বলেন, প্রিয় সন্তানের মৃত্যুতে প্রচ- মানসিক আঘাত পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে বাসে আগুন দেয়ার মামলায় তাকে আসামী করা হয়েছে। বুঝতেই পারছেন তার মনের অবস্থা।
সাত বছর পর লাশ : ২০০৮ সালের ১৯ জুলাই। শনিবার। দুপুর ১টা ২৯ মিনিট। প্রিয়জনদের কাঁদিয়ে তৎকালীন জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাইল্যান্ডের পথে পাড়ি জমিয়েছিলেন অসুস্থ আরাফাত রহমান কোকো। তারপর একে একে কেটে গেছে সাতটি বছর। নানা আইনী জটিলতা আর নিরাপত্তাহীনতার কারণে সুস্থ হয়ে প্রিয় মায়ের সান্নিধ্যে ফেরা হয়নি তার। প্রিয় দেশ, প্রিয় মানুষদের ছেড়ে নির্বাসনেই থাকতে হয়েছে বিদেশের মাটিতে। অবশেষে প্রিয় সেই মাটি, পরম প্রিয় মমতাময়ী সেই মায়ের কোলো ফিরে আসার স্বপ্নপূরণ হচ্ছে তার। তবে সেই ফিরে আসা আর জীবিত নয়, প্রিয় স্বদেশের মাটিতে তিনি ফিরে আসছেন লাশ হয়ে। শনিবার দুপুরে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে না ফেরার দেশে চলে গেছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নয়নমণি কোকো। জরুরি অবস্থার সময় গ্রেফতার আরাফাত ২০০৮ সালে তৎকালীন সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়ার পর চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন। সেখান থেকে পাড়ি জমিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায়। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর এবং রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার আগ পর্যন্ত দুই ছেলেকে ঘিরেই ছিল খালেদার জীবনযাপন। কিন্তু ওয়ান-ইলেভেনের সময়টিতে ভেঙে যায় জিয়া-পরিবার। তিন সদস্য তিন দেশে বসবাস করেন পরবর্তী সময়ে। খালেদা জিয়া বাংলাদেশে, তারেক রহমান লন্ডনে, কোকো মালয়েশিয়ায়।
শোক বই : আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে রাখা শোক বইয়ে স্বাক্ষর করতে দলের নেতা-কর্মীরা ভিড় করছেন। গতকালও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে তারা শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এছাড়া কার্যালয়ে বিদেশী ও বাংলাদেশে অবস্থানরত কূটনীতিকদের জন্য আরও একটি শোক বই খোলা হয়েছে। গতকাল বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা সে বইয়ে স্বাক্ষর করেছেন।
মালয়েশিয়ায় প্রথম জানাযা : বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস জানান, মালয়েশিয়ার কেন্দ্রীয় মসজিদ নাগারায় রোববার জোহরের নামাযের পর আরাফাত কোকোর নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পেনাং, পুত্রজায়া, জোহোর বারু, গ্যানটিং হাইল্যান্ডস, ক্যামেরন হাইল্যান্ডস, বুকিত বিন তানসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রবাসী বিএনপি নেতা-কর্মীরা জানাযায় অংশ নেন। পরে তারা কোকোর কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। দশ হাজারেরও অধিক লোক জানাযায় অংশ নেন বলে জানা গেছে। জানাযা শেষে তার লাশ হিমঘরে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে মঙ্গলবার সকালের দিকে বাংলাদেশে আনা হবে।
এখনো শোকে নির্বাক খালেদা জিয়া : ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর খবর পাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া শোকে এখনো নির্বাক। দল, জোট এবং পরিবারের লোকজন সমবেদনা জানাতে গুলশানে তার অফিসে আসছেন। কিন্তু বেগম জিয়ার সহকারী শিমুল বিশ্বাস জানিয়েছেন, কারো সঙ্গেই কথা বলছেন না তিনি। ঘনিষ্ঠ পারিবারিক সদস্যরা ছাড়া কারো সঙ্গে তিনি দেখাও করছেন না। শিমুল বিশ্বাস বলেন, প্রিয় সন্তানের মৃুতুতে প্রচ- মানসিক আঘাত পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে বাসে আগুন দেয়ার মামলায় তাকে আসামী করা হয়েছে। বুঝতেই পারছেন তার মনের অবস্থা। শিমুল বিশ্বাস জানান, পরিবারের ইচ্ছা আরাফাত রহমান কোকোকে মঙ্গলবার দেশে এনে জানাযার পর ঢাকার দাফন করার। কোকোর লাশ আনতে মালয়েশিয়ায় গেছেন তার মামা শামীম ইস্কান্দারসহ ৩ জন।
লাশ দেশে আনার ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কিনা এ প্রশ্নে শিমুল বিশ্বাস বলেন, এ ব্যাপারে সরকারকে জানানোর প্রয়োজন কেন হবে। শনিবার সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিবিসিকে বলেন, আরাফাত রহমানের লাশ আনার ব্যাপারে সরকারের নীতিগত কোনো আপত্তি নেই। তবে তিনি বলেন, এ নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা হলে সরকার সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
দাফন হতে পারে বনানী কবরস্থানে : শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর দাফন হতে পারে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে। এ ছাড়া জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে হতে পারে তার জানাযা। বিএনপি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। শায়রুল বলেন, দাফনের সম্ভাব্য স্থান হিসেবে রাজধানীর বনানী কবরস্থানকে প্রথম বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া, জানাযা সম্ভবত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে হবে। তবে পরিবার ও সিনিয়র নেতারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
গুলশান কার্যালয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা : বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানিয়েছেন। কার্যালয়ে প্রবেশ করলে দলের পক্ষে তাদের গ্রহণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান। তারা বেগম জিয়ার পক্ষ থেকে সমাবেদনা গ্রহণ করেন। পরে তারা গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে শোক বইতেও স্বাক্ষর করেন।
গতকাল বিকেল ৪টা থেকে বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসতে শুরু করেন। একে একে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন, মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন ডেভিড মিলি, মিসরের রাষ্ট্রদূত মাহমুদ ইজ্জাত, চায়না রাষ্ট্রদূত লি জুন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত শায়ের মোহাম্মদ, সৌদি রাষ্ট্রদূত ড. আবদুল্লাহ বিন নাসের আল বুশাইরী এবং জর্ডান ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত।
প্রথমে বিকেল চারটা দশ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রবেশ করেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন। এরপর পর্যায়ক্রমে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন চায়না, ফিলিস্তিন, সৌদি আরব ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত। এসময় তারা খালেদা জিয়ার স্বজন ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সমবেদনা জানান।
কার্যালয়ে বিশিষ্টজন ও নেতাকর্মীরা : সকাল থেকে কার্যালয়ের সামনে দলীয় নেতা-কর্মীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তা বাড়তে থাকে। বেলা একটার দিকে নারায়ণগঞ্জের বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার ও হেফাজতে ইসলাম নেতা নূর হোসাইন কাশেমির নেতৃত্বে পাঁচজন নেতা-কর্মী কার্যালয়ের ভেতরে যান। এছাড়া সেখানে যান বিএনপি ও মহিলা দলের নেতৃৃবৃন্দ।
এছাড়া আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসেন রাজনীতিবিদ, কবি, বুদ্ধিজীবীসহ বিশিষ্ট জনেরা। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বিকেল পৌনে ৫টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয় আসেন। তিনি সেখানে রাখা শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া অনেক বড় নেত্রী। আমি এখানে এসেছিলাম। বেশ কিছুক্ষণ ছিলাম। কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা হয়নি। তার ঘুমের রেশ এখনও কাটেনি। তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। তিনি বলেন আমি শোক বইয়ে লিখেছি, খালেদা জিয়া যেমন তার কনিষ্ঠ পুত্রের মৃত্যুতে শোকের সাগরে ভাসছেন, তেমনি আমরাও শোকাহত। তবে এ সময় তিনি রাজনৈতিক কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি।
কবি ও বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ফরহাদ মজহার বিকেল ৫টার দিকে সেখানে যান। প্রায় একই সময়ে সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রকৌশলী ফজলুল আজিম সেখানে উপস্থিত হন।
এছাড়া গুলশান কার্যালয়ে গিয়ে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানিয়েছেন বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। গতকাল বেলা ২ টা ২০ মিনিটে তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয় প্রবেশ করেন। এসময় দলের মহাসচিব আব্দুল মান্নান তার সাথে ছিলেন। পরে তিনি শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বলেছেন, খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের প্রধান ফটকের তালার চাবি ছিল সরকারের হাতেই। গত ৩ জানুয়ারি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য প্রধান ফটকে তালা দিয়েছিল। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হওয়াটা আশ্চর্যজনক। এটা শুভ লক্ষণ নয়।

Map of আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ