Bhatpara Nilkuthi-ঐতিহাসিক ভাটপাড়া নীলকুঠি-ইকোপার্ক

(ভাটপাড়া) গাংনী, মেহেরপুর, Gangni, Meherpur, Khulna, Bangladesh ,Bangladesh
Bhatpara Nilkuthi-ঐতিহাসিক ভাটপাড়া নীলকুঠি-ইকোপার্ক Bhatpara Nilkuthi-ঐতিহাসিক ভাটপাড়া নীলকুঠি-ইকোপার্ক is one of the popular Public & Government Service located in (ভাটপাড়া) গাংনী, মেহেরপুর ,Gangni listed under Public places in Gangni ,

Contact Details & Working Hours

More about Bhatpara Nilkuthi-ঐতিহাসিক ভাটপাড়া নীলকুঠি-ইকোপার্ক

আমার ভাটপাড়া নীলকুঠি !

১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দে লুইস বোনার্ড ( লুই বন্নো) নামক এক ফরাসি বণিক অবিভক্ত বাংলার চন্দননগরে প্রথম নীলচাষের সূচনা করেন। পরের বছর অর্থাৎ ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে ক্যারল ব্লুম নামক এক ইংরেজ বঙ্গদেশে সর্বপ্রথম নীলকুঠি স্থাপন করেন । মি. ব্লুম ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে অবহিত করেন যে, নীলচাষ কোম্পানির বিপুল মুনাফা লাভের একটি নতুন উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। আঠারো শতকে ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষিতে সেখানে বস্ত্রশিল্পে নীলের চাহিদা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পায় এবং নীলচাষে বিপুল মুনাফা লাভের সম্ভাবনা আছে বুঝতে পেরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বাংলার গ্রামে গ্রামে নীলকুঠি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় উনিশ শতকের প্রথমদিকে তদানীন্তন নদীয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার গাংনী থানাধীন সাহারবাটী মৌজায় কাজলা তীরবর্তী ভাটপাড়া নীলকুঠি নির্মিত হয়। গাংনী উপজেলাধীন অধিকাংশ নীলকুঠির মতো ভাটপাড়া নীলকুঠিটি ছিল শিকারপুর কনসার্নের আওতায় শিকারপুর কনসার্নের আয়তন ছিল ২৪৯ বর্গমাইল। এই কনসার্নের সদরদপ্তর ছিল পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার করিমপুর থানাধীন শিকারপুর গ্রাম। ব্লুমফিল্ড,জন স্টুয়ার্ট, আলেক্সান্ডার কিউ, জন এফ হর্ডার প্রমুখ কুঠিয়ালদের শোষণ ও নিপীড়নের স্মৃতিবহনকারী ভাটপাড়া নীলকুঠি ১৮১০ থেকে ১৮২০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত হতে পারে। ১৮৬১ সালে নীলচাষে প্রজাদের বাধ্য করা যাবে না মর্মে আইন প্রণীত হলে মেহেরপুর অঞ্চলে নীলচাষ কমতে থাকে। তবে বিশ শতকের প্রথম প্রথম দশক পর্যন্ত মেহেরপুরের কোথাও কোথাও নীলচাষ অব্যাহত থাকে। ভাটপাড়া নীলকুঠির আওতাধীন এলাকায় বিশ শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত নীলচাষ চালু ছিল বলে জনশ্রুতি রয়েছে। কোম্পানির শাসন ও নীলচাষের অবসান হলে ভাটপাড়া নীলকুঠির দায়িত্ব নেয় মেদিনীপুর জমিদারি। ১৯৫১ সালে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ হলে ভাটপাড়া নীলকুঠির দায়িত্ব অর্পিত হয় জেলা প্রশাসনের ওপর। ২৭ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত নীলকুঠিটি যুগপৎ নীলকরদের শোষণ-পীড়ন ও বাংলার কৃষক সমাাজের সংগ্রামের সাক্ষ্যবহন করে চলেছে। এই কুঠি থেকে বিলেতে নীল রপ্তানি হতো। উনিশ শতকে কলকাতার নীল-শিল্প, নীলচাষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ভাগ্য ভাটপাড়ার নীলকুঠির ওপর নির্ভর করতো।
আঠারো ও উনিশ শতকের জমিদারদের বাসভবনের দেশজ নির্মাণশৈলী সঙ্গে পাশ্চাত্য স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয় ঘটিয়ে ভাটপাড়া নীলকুঠির মূল ভবনটি আয়তাকার-ভূমি পরিকল্পনায় নির্মাণ করা হয়। ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৭০ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে উত্তরমুখী করে । নীলকুঠির অভ্যন্তর ভাগ উষ্ণ রাখার জন্য দুটি ফায়ার প্লেস ছিল। নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত হয় চুন ,সুরকি ও ইট। কুঠিবাড়ির ছাদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় লোহার বিম ও ইটের টালি। দোতলায় ওঠার জন্য পুরোনো পদ্ধতির সিঁড়িও তৈরি করা হয়।
২০১৬ খ্রিস্টাব্দে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন কাজলা নদীবর্তী ভাটপাড়া নীলকুঠি ঘিরে একটি মনোরম ইকোপার্ক গড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে । বর্তমানে কুঠিবাড়িটি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত পুরাকীর্তি।

Map of Bhatpara Nilkuthi-ঐতিহাসিক ভাটপাড়া নীলকুঠি-ইকোপার্ক