পঞ্চগড় জেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর জেলা, পূর্বে নীলফামারী জেলা এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অবস্থিত।
পঞ্চগড়ের রাষ্ট্রীয় সীমানা:
২৬ ডিগ্রি ২০মিনিট উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৮ ডিগ্রি ৩৪ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত পঞ্চগড় "জেলা" হিসেবে নবগঠিত ও আয়তনে ক্ষুদ্র হলেও এর পারিপার্শ্বিক ভৌগলিক অবস্থান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৪৭ সালে স্যার সিরিল রেডক্লিফ কর্তৃক নির্দেশিত এই জেলার সীমান্ত রেখা অত্যন্ত আঁকাবাঁকা ও ভঙ্গুর। পঞ্চগড় জেলার তিনদিকেই ভারতীয় সীমান্ত। এই সীমান্ত অঞ্চল ১৮০মাইল বা ২৮৮ কিলোমিটার। জেলার মোট আয়তন ৫৯৩.২৪ বর্গমাইল।
পঞ্চগড় জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য:
আধুনিক পঞ্চগড় জনপদটি আয়তনে ক্ষুদ্র হলেও এর প্রাচীন ও প্রাগৈতিহাসিক ইতিবৃত্ত অত্যন্ত সম্বদ্ধ। অতি প্রাচীন ও প্রাগৈতিহাসিক ইতিবৃত্ত সম্বদ্ধ করেছে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের সর্বোত্তরের এই জনপদটিকে। পঞ্চগড় জেলার নামই এর যথার্থ স্বাক্ষ্য বহন করে। হিন্দু ও বৌদ্ধ যুগে পুন্ড্র বর্ধন নগরীর অনতিদূরেই ছিল আজকের পঞ্চগড়ের অবস্থান। ভিন্নমতে, গৌড় রাজ্যকে এক সময় বলা হতো পঞ্চগৌড়।
পঞ্চগড় চা বাগান:
যদিও বাংলাদেশের ভূ-খন্ডে চা চাষ শুরু হয় ১৮৪০ সালে চট্টগ্রামের ক্লাব প্রাঙ্গণে, ১৮৫৪ সালে নিলেটে বাণিজ্যিকভাবে এর উৎপাদন শুরু হয়। প্রায় ১৫০ বছর পরে ১৯৯৮ সালে এদেশের একজন শিল্পপতি লেঃ কর্ণেল (অবঃ) কাজী শাহেদ আহমদ পঞ্চগড় অঞ্চলের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে ভারতের চা চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে পঞ্চগড়ের তৎকালীন জেলা প্রশাসকের সহায়তায় কিছু জমি কিনে চা চাষ শুরু করেন। তিনি চা বাগানের নামকরণ করেন "কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট"। এখানে অর্গানিক পদ্ধতিতে চা উৎপাদিত হয়। সিলেটে চা ভ্যালীতে ইপিলিপিল গাছ সেট ট্রি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু পঞ্চগড়ে ঔষধি গাছ সেট ট্রি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট ৬/৭ বছরের মধ্যে চা পাতা আহরণ শুরু করে বছরে বর্তমানে ১ লক্ষ ৭২ হাজার কেজি চা উৎপাদন করছে। এ অঞ্চলে চা চাষের ক্ষেত্রে কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট অগ্রপথিক। এ কোম্পানীর সফলতা অনুসরণ করে বর্তমানে এখানে আরো ৪টি চা বাগান গড়ে উঠেছে। এগুলো হলো: তেঁতুলিয়া চা কর্পোরেশন লিঃ, স্যালিন্যাল টি এস্টেট, করতোয়া টি এস্টেট ও ডাহুক টি এস্টেট।