১৯৯৪ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত। গোপালগঞ্জ জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে এক মনোরম পরিবেশে কলেজটি অবস্থিত। কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন গোপালগঞ্জের কৃতি সন্তান স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্ট বিদ্যানুরাগী ড. সাইফুর রহমান নান্টু। এ কাজে তাঁকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন তাঁরই জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও দাতা সদস্য মরহুম শেখ লুৎফর রহমান লুথু মিয়া এবং তাঁরই আরেক সহোদর বিশিষ্ট সমাজসেবক ও গোপালগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান জনাব শেখ হাফিজুর রহমান পলু মিয়া।
ড. সাইফুর রহমান নান্টু তার প্রবাসী জীবনে সুদূর সুইডেনে অবস্থানকালে গোপালগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া অবহেলিত ও দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। আর তাঁর এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিনি ১৯৯৪ সালে দেশে ফিরে উদ্যোগ গ্রহণ করেন একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার। সে লক্ষ্যে তিনি তৎকালীন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ আঃ মোতালেব মিয়া ও স্থানীয় গণ্যমান্য শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে একটি সভায় মিলিত হন। উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে ড. সাইফুর রহমান সাহেবের পিতা সাবেক এম,পি (সংসদ সদস্য) ও বিশিষ্ট সমাজসেবক মরহুম হাজী শেখ মুজিবর রহমান লালমিয়া সাহেবের নামে কলেজ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তাদের এ সিদ্ধান্তকে গোপালগঞ্জের আপামর জনসাধারণ স্বাগত জানান। আর সে থেকে এ হাজী লালমিয়া সিটি কলেজের পথ চলা শুরু হয়। গোপালগঞ্জ সরকারী বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ জনাব এনামূল কবীরকে অধ্যক্ষ করে মাত্র দশজন শিক্ষককে নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ হিসেবে এর যাত্রা শুরু। তারপর হাঁটি হাঁটি পা পা করে কলেবর বৃদ্ধি পেয়ে আজ এখানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (বি.এ, বি.এস.এস, বি.বি.এ) ও স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীসহ সাতান্নজন শিক্ষক-কর্মচারী ও প্রায় দুই হাজার ছাত্র-ছাত্রীর এক বিরাট কর্মযজ্ঞে রূপান্তরিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক জনাব মোঃ আজিজুল হক মোল্লা, জনাব পলাশ কুমার বিশ্বাস, জনাব সত্যেন্দ্র নাথ মন্ডল, জনাব ফণীন্দ্র নাথ বিশ্বাস, জনাব দীলিপ কুমার বিশ্বাস, জনাব চিত্ত রঞ্জন তালুকদার ও জনাব মোঃ হায়দার আলী কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ চার বৎসর বিনা পারিশ্রমিকে চাকুরী করেন এবং কলেজটির উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ড. সাইফুর রহমান নান্টু ও তাঁর সহধর্মিণী অত্র কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ (অনারারি) জনাব লায়লা আক্তার রহমান-এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে, কলেজের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা-কর্মচারীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং সর্বোপরি পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে কলেজটি আজ ঢাকা বোর্ডের শীর্ষস্থানীয় কলেজগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে নিজের অবস্থান করে নিয়েছে। আর তাই কলেজটি আজ বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত।