লালমনিরহাট জেলা আয়তন ১২৪১.৪৬ বর্গ কিঃমিঃ। উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলা, দক্ষিণে রংপুর জেলা, পূর্বে কুড়িগ্রাম ও পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলা, পশ্চিমে নীলফামারী ও রংপুর জেলা। নদী ৭; তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজন উল্লেখযোগ্য। হিমালয় থেকে সরাসরি নেমে আসার কারণে সানিয়াজন খরস্রোতা। স্বর্ণামতি, ত্রিমোহনী, রতনাই ও সতী নদী মৃতপ্রায়। এ জেলার হাতিবান্ধা উপজেলায় দোয়ানী নামক স্থানে তিস্তা নদীর উপরে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প ‘তিস্তা ব্যারেজ’ অবস্থিত। এর দৈর্ঘ্য ৬১৫ মিটার। বার্ষিক গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২.৩০সে এবং সর্বনিম্ন ১১.২০সে। বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২৯৩১ মিঃমিঃ।
জেলা শহর ৯টি ওয়ার্ড ও ৬৩ টি মহল্লা নিয়ে গঠিত। আয়তন ১৭.৬২ বর্গ কিঃমিঃ। জনসংখ্যা ৫৬৬৭২; পুরুষ ৫২.০২%, মহিলা ৪৮.৯৮%। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিঃমিঃ ৩২১৬ জন।
শিক্ষার হারঃ ৪৭.৯%। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম থেকেই লালমনিরহাট রেল জংশন হিসেবে সুখ্যাত। এখান থেকে আসাম এবং হিমালয়ের পাদদেশাঞ্চলে যাওয়া যেত। বর্তমানে এটি রেলের পশ্চিমাঞ্চলীয় সদর দপ্তর। ডাকবাংলো ১, সার্কিট হাউজ ১।
প্রশাসনঃ জেলা সৃষ্টি ১৯৮৪ সালে। উপজেলা ৫, পৌরসভা ২, ওয়ার্ড ১৮, মহল্লা ৮৫, ইউনিয়ন ৪২, মৌজা ৩৮২, গ্রাম ৪৮৪, ছিটমহল ৩৩।
উপজেলাসমূহঃ
* লালমনিরহাট সদর,
* আদিতমারী,
* হাতিবান্ধা,
* কালীগঞ্জ এবং
* পাটগ্রাম।
লালমনিরহাটকে ছিটমহল বেষ্টিত জেলা বলা হয়। এ জেলায় ৩৩ টি ছিটমহল রয়েছে, যার আয়তন ১৮০৭ হেক্টর। এসবের ২৭ টি পাটগ্রাম উপজেলায় অবস্থিত। বৃহত্তম ও আলোচিত ছিটমহল দুটি হচ্ছে গহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা। তিনবিঘা করিডোর এর মাধ্যমে এই দুই ছিটমহলকে মূল ভূ-খন্ডের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
''''''''নামকরণের ইতিহাস''''''''
এ জেলার নাম কেন লালমনিরহাট হলো সে সম্পর্কে বেশ কয়েকটি মত চালু আছে। সেগুলো হলো-
১। উনবিংশ শতাব্দিতে যখন বেংগল ডুয়ার্স রেল লাইন তৈরির জন্য মাটি খননের কাজ চলছিল তখন শ্রমিকরা এখানে মাটিন নিচে লাল পাথর দেখতে পায়। সেই থেকে এ জায়গার নাম হয়েছে 'লালমনি'।
২। অন্য মতানুসারে বৃটিশ রেলওয়ে যে মহিলার জমি অধিগ্রহণ করেছিল তার নাম ছিল লালমনি। তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এলাকার লোকজন এ জায়গার নাম রাখে 'লালমনি'।
৩। অন্য আরেকটি মত হলো, ১৭৮৩ সালে সাধারণ কৃষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লালমনি নামে এক মহিলা কৃষক নেতা নুরুলদিনকে সাথে নিয়ে বৃটিশ সৈন্য ও জমিদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে। সেই থেকে এ জায়গার নাম হয় 'লালমনি'।
কালের বিবর্তনে 'হাট' শব্দটি 'লালমনি' শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে 'লালমনিরহাট' নামকরন হয়েছে।