সবুজের দেশ, সোনালী ফসলের দেশ, নদীর দেশ আমাদের বাংলাদেশ । কোন শিল্পীর তুলির কৃত্রিম আঁচড়ে নয় ; প্রকৃতির জল-কাদা আর সুবজের বুনানো অপরূপ সৌন্দর্য জুড়ে রয়েছে আমাদের স্বদেশভূমি। পদ্মা , মেঘনা, যমুনার জল ধোয়া শরীরে খাড়া হয়ে আছে অসংখ্য গ্রাম আর ছোট-বড় শহর, বন্দর।
একদা দেশে জীবিকার খোঁজে দূর থেকে ছুটে আসা মানুষেরা দেশীদের ঝাঁকে মিশে পদ্মার তীরের মহাকাল গড়ে যে বসতি গড়েছিল তা থেকেই বতর্মান রাজশাহী মহানগরীর জন্ম।
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে রাজশাহী বিভাগের দক্ষিণ পশ্চিমে রাজশাহী একটি বিস্মৃত জেলা। রাজশাহী জেলা র উত্তরে দিনাজপুর ও পশ্চিম বঙ্গের পশ্চিম দিনাজপুর, পশ্চিমে পশ্চিম বঙ্গের মালদহ জেলা, পূর্বে পাবনা ও বগুরা জেলা এবং দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্ত ঘেঁষে পদ্মা নদী প্রবাহিত। এই পদ্মা নদী ই রাজমাহীকে পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে পৃথক করে রেখেছে।
প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে রাজশাহী বিভাগের সৃষ্টি হয় ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে। তখন বিভাগীয় সদর দপ্তর ছিল মুর্শিদাবাদে। মুর্শিদাবাদ, মালদাহ, জলপাইগুড়ি, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, পাবনা ও রাজশাহী এ আটটি জেলা নিয়ে গঠিত ছিল তদানিন্তন রাজশাহী বিভাগ। কয়েক বছর পর বিভাগীয় সদর দপ্তর বর্তমান রাজশাহী শহরের রামপুর-বোয়ালিয়া মৌজায় স্থানান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ১৮৮৮ সালে বিভাগীয় সদর দপ্তর স্থানান্তরিত হয় জলপাইগুড়িতে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর পুনরায় বিভাগীয় সদর দপ্তর রাজশাহীতে স্থানান্তরিত হয়।
ষাটের দশকের শুরুতে খুলনা বিভাগ সৃষ্টি হওয়ার পূর্বে বর্তমান খুলনা বিভাগের জেলাগুলিও রাজশাহী বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ছিল। খুলনা বিভাগ আলাদা হওয়ার পর থেকেই রাজশাহী অঞ্চলের ৮টি (রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও জয়পুরাট) এবং রংপুর অঞ্চলের ৮টি (রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁ ও পঞ্চগড়) মোট ১৬টি জেলা রাজশাহী বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
গত ৯ মার্চ ২০১০ তারিখে এক সরকারি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে রংপুর বিভাগ গঠন করায় রাজশাহী অঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে বর্তমান রাজশাহী বিভাগ নতুন রূপ লাভ করে।